এই লেখায় ইতিহাসের পথ ধরে পরিবর্তনের যে পর্যায়গুলোতে ক্যামেরার প্রাথমিক অবস্থা থেকে “বর্তমানের স্টেট অব দ্য আর্ট” এ রূপান্তরের একটা সারাংশ তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
১৫০০
প্রথম ক্যামেরাটি ছিল একটি পিনহোল (pinhole) ক্যামেরা, যাকে বলা হচ্ছে
“ক্যামেরা অবসকুরা” (Camera Obscura)। এটির আবিষ্কারক ইবনে আল-হায়থাম (Ibn
Al-Haytham), যিনি আলহাজেন (Alhazen) নামে সুপরিচিত ছিলেন।
১৮৩৯
ফ্রেঞ্চ অ্যাকাডেমি অব সাইন্সেস (French Academy of Sciences) এর
গবেষণার ফসল ছিল ডিগারিওটাইপ ক্যামেরা (Daguerreotype Camera)। এই
ক্যামেরাগুলো পৃথিবীর অন্যান্য সব আবিষ্কারের মধ্যে সবচেয়ে মূল্যবান হিসাবে
এখনও বিবেচিত হয়।
১৮৪০
আমেরিকায় ফটোগ্রাফিতে আলেক্সান্ডার ওয়ালকট (Alexander Wolcott) এর তৈরী
করা ক্যামেরাটি প্রথম ক্যামেরা যার জন্য পেটেন্ট জারী করা হয়েছিল।
১৮৫৯
টমাস সুটন (Thomas Sutton) প্যাটেন্ট করেছেন তার প্যানারোমিক ক্যামেরার মডেলটির জন্য।
১৮৬১
স্টেরিওস্কোপ ভিউয়ার আবিষ্কার করেন অলিভার ওয়েন্ডেল হোমস (Oliver Wendell Holmes)।
১৮৮৮
কোডাক (Kodak) রোল-ফিল্ম ক্যামেরার জন্য পেটেন্ট করেছেন জর্জ ইস্টম্যান
(George Eastman)। ফটোগ্রাফিক ফিল্মের বহুল প্রচলনের জন্য তিনি ছিলেন
পথিকৃত। ১৮৮৫ সালে তিনি বাণিজ্যিকভাবে পেপার ফিল্ম প্রস্তুত ও বাজারজাত করা
শুরু করেন। তিনি প্রথম বারের মত “কোডাক বক্স ক্যামেরা” (Kodak box camera)
বাজারে আনেন, যা খুব সহজে চালানো যেত, দামেও ছিল কম।
১৯০০
সর্বসাধারণের ক্রয়ের জন্য ব্যাপকভাবে বাজারজাত করা ক্যামেরা নাম – দি
ব্রাউনি (the Brownie) – এটিও ছিল ইস্টম্যান কোম্পানীর। ১৯৬০ দশক পর্যন্ত
এটি বিক্রি হয়েছিল।
১৯০০
আবিষ্কৃত হয় “রিজক্যামেরা” (Reisecamera)। একেবারে হালকা ওজনের এই
ক্যামেরাকে ভাঁজ করে ছোট করে ফেলা যেত; আর এ কারণেই ল্যান্ডস্কেপ
ফটোগ্রাফারদের খুব পছন্দের ফটো ক্যামেরা ছিল এটি।
১৯১৩/১৯১৪
জার্মানীর লাইকা ক্যামেরা কোম্পানীর (German Leica Camera) অসকার বারনাক
(Oskar Barnack) এর হাত ধরে প্রথম বারের মত পৃথিবীবাসী দেখতে পান ৩৫এমএম
স্থির ক্যামেরা (35mm still camera)। পরবর্তীতে সকল ফিল্ম ক্যামেরা
প্রস্তুতকারীদের জন্য এটাই স্টান্ডার্ড হিসাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
১৯৪৮
এডউইন ল্যান্ড (Edwin Land) পোলারয়েড (Polaroid) ক্যামেরা আবিষ্কার করেন। এতে ছবি উঠানোর পর মাত্র এক মিনিটে প্রিন্ট বের করা যেত।
১৯৬০
ইউ.এস. নেভি’র জন্য গভীর পানির নীচে ব্যবহার উপযোগী বিশেষায়িত ক্যামেরা তৈরী করে EG&G নামের একটি কোম্পানী।১৯৭৮
কোনিকা (Konica) প্রথমবারের মত বাজারে আনে পয়েন্ট-এন্ড-শ্যুট
(point-and-shoot) ক্যামেরা, কোনিকা সি৩৫ এএফ (Konica C35 AF)। জাপানে একে
“জাসুপিন” (Jasupin) নামে ডাকা হত।
১৯৮১
সনি কর্পোরেশন প্রদর্শন করে বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্টিল
ক্যামেরা – সনি মাভিকা (Siny Mavica)। ডিজিটাল ক্যামেরা এবং টেলিভিশনের
ইমেজ প্রায় একই টেকনোলজিতে কাজ করায় এই ক্যামেরা মিনি ডিস্কে ইমেজ রেকর্ড
করে ভিডিও রিডারে জমা করে রাখতে পারত। পরে এই ইমেজগুলো টেলিভিশনের পর্দায়
দেখানো বা কালার প্রিন্টারে প্রিন্ট করা যেত।
১৯৮৫
“ব্যবহার শেষে ফেলে দেয়া যেত” এমন ক্যামেরার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় ফুজি (Fuji)। এই ক্যামেরার উদ্ভাবকেরা এই ডিভাইসের নাম দেন “Single-use cameras”।১৯৯১
সাংবাদিক পেশায় নিয়োজিত ফটোগ্রাফারদের জন্য প্রফেশনাল ডিজিটাল ক্যামেরা
সিস্টেম (digital camera system) রিলিজ করে কোডাক (Kodak)। এটা ছিল নিকন
এফ-৩ (Nikon F-3) এর পরিবর্তিত ভার্সন যাতে ছিল ১.৩ মেগাপিক্সেল সেন্সর।
১৯৯৪-১৯৯৬
সব শ্রেণীর ব্যবহারকারীদের জন্য বাজারে আনা প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরা
যেগুলো সিরিয়াল কেবল দিয়ে বাসার কম্পিউটারের সাথে সংযোগ দেয়া যেত, সে গুলোর
মধ্যে ছিল, অ্যাপল কুইকটেক ১০০ ক্যামেরা (Apple QuickTake 100 camera,
February 17 , 1994), দি কোডাক ডিসি৪০ ক্যামেরা (the Kodak DC40 camera,
March 28, 1995), দি ক্যাসিও কিউভি-১১ (the Casio QV-11 with LCD monitor,
late 1995), এবং সনি’র সাইবার-শট ডিজিটাল স্টিল ক্যামেরা (Sony’s
Cyber-Shot Digital Still Camera, 1996).
২০০০
জাপানের শার্প কোম্পানী বিশ্বের প্রথম ক্যামেরা ফোনের সাথে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেয়।
২০০৫
ক্যানন ইওএস ৫ডি (Canon EOS 5D) বাজারে ছাড়া হয়। এটাই বিশ্বের প্রথম
কনজুমার-লেভেলের ফুল-ফ্রেম ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা যাতে ব্যবহার করা হয়
24x36mm CMOS সেন্সর।
সেল ফোন ক্যামেরা
কোন এক অদ্ভূত কারণে, জাপানের শার্প কর্পোরেশনের বিশ্বের প্রথম ক্যামেরা সেল ফোন বাজারে এনেছিল। কিন্তু, ক্যামেরা ও ডিজিটাল ফোনের এই কম্বিনেশনটা দারুণভাবে বাজারে সাড়া ফেলেছিল। মোবাইল ফোনে ক্যামেরা নাই – বর্তমানে এ কথা চিন্তাও করা যায় না। ক্যামেরা এখন সব জায়গাতে।সনি এরিকসন এস৭৫০ (Sony Ericsson S750)
২০০৫ সাল নাগাদ ব্যবহারকারীগণ তাদের মোবাইলের সাথে বিল্ট-ইন ক্যামেরাকে পছন্দ করে এসেছেন। তাই নির্মাতারা একে অপরের সাথে সবচাইতে ভাল মানের ছোট ক্যামেরা তৈরির জন্য প্রতিযোগিতা শুরু করে। আর, এই সময়ই সনি এরিকসন এস৭৫০ বাজারে আসে।এস৭৫০ ছিল প্রথম ক্যামেরা ফোন যার ক্যামেরা অটোফোকাস করার ফিচার ছিল এবং এতে ২ মেগাপিক্সেল সেন্সর ছিল। যদিও এ সময় স্যামসং তাদের SCH-V770 ফোনের ক্যামেরাতে অটোফোকাস প্রযুক্তি নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
এই ফোনের সাফল্যের পর থেকেই বাজারের সব বড় কোম্পানিগুলো মোবাইল ক্যামেরা প্রযুক্তির উপরে হামলে পড়ে। কে কার চাইতে কত ভাল প্রযুক্তি ক্যামেরাতে যুক্ত করতে পারে – এই নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ শুরু হয়।
স্যামসং এম৮৯১০ (Samsung M8910)
মোবাইল-ক্যামেরা যুদ্ধের কোন এক সময়ে কোম্পানিগুলো তাদের খেলায় নতুন নতুন তাস যুক্ত করতে থাকে। স্যামসং এর M8910 যেন সেই যুদ্ধে যথেষ্ট পরিমাণ টাটকা ঘি ঢেলে দিল। এই ফোন লঞ্চের মধ্যে দিয়ে মোবাইলের ক্যামেরার মেগাপিক্সেলের সংখ্যা ডাবল ডিজিট অতিক্রম করে ১২ মেগাপিক্সেলে এসে দাঁড়ায়। M8910 ফোনে এমন সব ফিচার যুক্ত করা হয় যা সাধারণত প্রো-লেভেলের ডিজিটাল ক্যামেরাতে দেখতে পাওয়া যায়।নকিয়া লুমিয়া ১০২০ (Nokia Lumia 1020)
২০১৩ সালে নকিয়া মোবাইল ক্যামেরার জগতে এক চমকপ্রদ ডিভাইস নিয়ে হাজির করে – Lumia 1020। এতে ৪১ মেগাপিক্সেলের সেন্সর যুক্ত করে হয়েছিল, যা প্রফেশনাল-লেভেলের DSLR ক্যামেরার থেকে বেশি শক্তিশালী ছিল। Lumia 1020 তে Carl Zeiss লেন্স, ইমেজ স্টাবিলাইজেশন, এবং লস-লেস ডিজিটাল জুম করার PurView Pro টেকনোলজি যুক্ত ছিল।এই ক্যামেরাগুলি এই সময়ের এভারেজ ফোনগুলির মত না, তবে এর অন্তর্ভূক্তি অন্যান্য ফোন নির্মাতাদেরকে মোবাইলের জন্য আরও উন্নততর টেকনোলজির ক্যামেরা উদ্ভাবনে উৎসাহিত করেছিল।
মিররলেস ক্যামেরা (Mirrorless Cameras)
বর্তমানে মিররলেস ক্যামেরা নতুন উন্মাদনায় পরিণত হচ্ছে। কারণ হিসাবে বলা যায়, এর সুবিধাজনক ছোট আকৃতি এবং ডিএসএলআর ওর মত সমান গুণগত মানসম্মত ছবি প্রদানের সক্ষমতা। এ সব কারণে, বিশেষত: ট্রাভেল ফটোগ্রাফার, স্ট্রীট ফটোগ্রাফার এবং যারা নতুন ফটোগ্রাফি উন্মাদনায় মেতেছেন তাদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা ব্যাপক।টেকনিক্যালি বলতে গেলে, Epson কোম্পানির তৈরী Epson RD1 প্রথম মিররলেস ক্যামেরা। এটি ২০০৪ সালে বাজারে চলে আসে। কিন্তু, প্রযুক্তিটি সময়ের আগে আলোর মুখ দেখেছিল। জনপ্রিয়তা পেয়ে ক্যামেরা মার্কেটে এই প্রযুক্তির শক্ত ভিত্তি পেতে বছরের পর বছর সময় লেগে যায়।
ফুজিফিল্ম ফাইনপিক্স এক্স১০০ (Fujifilm FinePix X100)
যদিও ফুজিফুল্ম প্রথম মিররলেস ক্যামেরা আবিষ্কার করে নাই, এমনকি জনপ্রিয় মিররলেস ক্যামেরাও তাদের কারখানা থেকে বের হয় না। কিন্তু, ফুজি’র FinePix X100 ক্যামেরার মাধ্যমে তাদের খাস ব্যবহারকারী: “প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার” যারা চাইছেন এতে থাকবে পূর্বে ব্যবহৃত ফিল্ম ক্যামেরার সৌন্দর্য্য ও ব্যবহার করার অপূর্ব কন্ট্রোল।X100 এর ফিচারের মধ্যে রয়েছে ওয়াইড এ্যাঙ্গেল প্রাইম লেন্স এবং ক্যামেরার সাথে থাকা রেঞ্জফাইন্ডারের মত ভিউফাইন্ডার দিয়ে দেখে শ্যুট করার সক্ষমতা।
সনি আলফা ৭ সিরিজ (Sony Alpha 7 Series)
সনি কর্পোরেশন ২০১৩ সালে মিররলেস ক্যামেরা তৈরীতে প্রভূত উন্নত করে প্রো-ফটোগ্রাফারদের জন্য বাজারে নিয়ে আসে আলফা ৭ (Alpha 7) এবং আলফা ৭আর (Alpha 7R). এই মিররলেস ক্যামেরাগুলো প্রথম ক্যামেরা যেগুলোতে জুড়ে দেয়া হয় ফুল-ফ্রেম সেন্সর। ফুল-ফ্রেম মিররলেস ক্যামেরা এখন নিজেদের আসনকে তুলে নিয়ে এসেছে প্রফেশনাল-লেভেলের ডিএসএলআর এর মূল প্রতিযোগীর কাতারে।অ্যাকশন ক্যামেরা (Action Cameras )
যদিও অ্যাকশন ক্যামেরা এবং চার-মোটরযুক্ত হেলিকপ্টারগুলো মূলত: ভিডিও ধারণের জন্য তৈরী করা হয়েছিল; ইমেজিং এর ক্ষেত্রে এই দুটি ডিভাইসের উল্লেখ করাটা জরুরী; চোখ ধাঁধানো ছবি তোলার ক্ষেত্রে সাধারণের সক্ষমতার পরিধিকে বিস্তৃত করার ক্ষেত্রে এদের সংযোজন যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।গোপ্রো এইচডি হিরো (GoPro HD Hero)
সার্ফার নিক উডম্যান (Nick Woodman) চাইছিলেন যে, তিনি যখন সার্ফ করেন তার পুরো সেশনটা তিনি রেকর্ড করে রাখবেন। এই ব্যাপারটা সম্ভব করার জন্য তিনি কিছুদিন ৩৫এমএম ক্যামেরা দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে গেলেন। এই কাজের জন্য ডেডিকেটেড একটা কিছু তৈরী করার চিন্তা থেকে তিনি নতুন একটা ক্যামেরার ডিজাইন নিয়ে গবেষণা করলেন। অবশেষে ২০১০ সালে তার নিজের কোম্পানি, গোপ্রো (GoPro), থেকে বাজারে উন্মুক্ত করলেন, GoPro HD Hero ক্যামেরা।বৈরী আবহাওয়াতে টিকে থাকার উপযোগী, পানিরোধক অ্যাকশন ক্যামেরা হিসাবে HD Hero-ই প্রথম ক্যামেরা যার 1080p রেজুলেশনে ভিডিও ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। আর, সেই থেকেই প্রচলিত অ্যাকশন ক্যামেরার জগতে এই Hero ধারার ক্যামেরাই স্ট্যান্ডার্ড হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।
লাইট-ফিল্ড ক্যামেরা (Light-field Camera)
২০১২ সালে সর্বসাধারণের ব্যবহারের উপযোগী লাইট-ফিল্ড ক্যামেরাকে সবার আগে বাজারে নিয়ে আসে লাইট্রো (Lytro)। ফটোগ্রাফার ও এর সাথে জড়িতদের জন্য এই ক্যামেরা একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। লাইট্রোর নতুন টেকনোলজিক্যাল ফিচার সাবজেক্টের ইমেজের ইনফরমেশনকে গ্রহন করে এবং চাইলে পরবর্তীতে সেই ইমেজকে পুনরায় ফোকাস ঠিক করে নেয়া যায়।অর্থাৎ কিনা, ব্যবহারকারী যখন Lytro ব্যবহার করেন, তখন তিনি ক্যামেরার ডিসপ্লের টাচ স্ক্রিনে স্পর্শ করে ফোকাল প্লেন (focal plane) পরিবর্তন করতে পারবেন। এছাড়াও পিসি থেকেও এই পরিবর্তনের কাজটি করা সম্ভব।
Lytro এবং এর পরবর্তী উন্নত সংস্করণ Lytro Illum কনজ্যুমার লেভেলে খুব বেশী জনপ্রিয়তা না পেলেও এই টেকনোলজিটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। মোবাইল কোম্পানীগুলো তাদের ক্যামেরায় এই টেকনোলজিকে ব্যবহারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
যে টেকনোলজিগুলো হারিয়ে গিয়েছে
গত ১০ বছরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মোটা দাগের উন্নতি সাধিত হয়েছে। এর উল্টা চিত্রও আছে। কালের গহবরে হারিয়ে গেছে কিছু টেকনোলজি এবং আইকোনিক ক্যামেরা ইকুইপমেন্ট। ফটোগ্রাফির ইতিহাসের দুইটা জিনিষের উল্লেখ না করলেই নয়।পোলারয়েড ইন্সট্যান্ট ফিল্ম (Polaroid Instant Film)
২০০৮ সালে বিখ্যাত ও এক কালের সেরা উদ্ভাবনী কোম্পানি পোলারয়েড (Polaroid) তাদের সকল প্রকার ইন্সট্যান্ট ফিল্ম ও ক্যামেরা তৈরী করা বন্ধ করে দেয়। পোলারয়েডকে ইন্সট্যান্ট ফটোগ্রাফি ও জেনারেল ফটোগ্রাফিতে পথিকৃত ধরা হয়; কিন্তু সদাপরিবর্তনশীল ডিজিটাল যুগে সদাপরিবর্তনশীল পাবলিক ডিমান্ডের ধারা বুঝতে ও সে অনুযায়ী নিজেদের উদ্ভাবনীকে চালিত করতে ব্যর্থ হয়।অন্য দিকে, অন্যান্য কোম্পানিগুলো এই শুন্যস্থান পূরণে এগিয়ে এসেছে। ফুজিফিল্ম দু’টি ইন্সট্যান্ট ক্যামেরা ও ফিল্ম নিয়ে হাজির হয় – Instax Mini এবং Instax Wide। এমনকি পুরনো Polaroid ক্যামেরার জন্যও এখন পর্যন্ত ইন্সট্যান্ট সিট ফিল্ম তৈরী করে চলেছে ফুজি।
এর পরে আসে Impossible Project। এটি জনপ্রিয় সব মডেলের পোলারয়েড ক্যামেরাগুলোর জন্য ফিল্ম প্যাক তৈরী করা শুরু করে। ১৯৮৯ সালে টেইলর সুইফট তার বিখ্যাত অ্যালবামের কভার ফটোর জন্য Impossible Project এর ফিল্ম ব্যবহার করেছিলেন।
কোডাক কোডাক্রোম (Kodak Kodachrome)
একটা সময় ছিল, কোডাকের কোডাক্রোম কালার ফিল্ম ফোটোগ্রাফি ইন্ডাস্ট্রিতে স্ট্যান্ডার্ড হিসাবে ধরা হত। শিল্পী, ফটোজার্নালিস্ট এবং ফটোগ্রাফারদের সব কাজের জন্য এটি ছিল দৈনন্দিন ব্যবহার্য্য ফিল্ম। কিন্তু, এই ফিল্ম প্রসেসিং প্রক্রিয়া খুব জটিল ও ব্যয়বহুল ছিল।ফলশ্রুতিতে, ডিজিটাল ফটোগ্রাফির বিকাশের পর প্রতিযোগিতার বাজারে এর বিক্রয়মূল্য কমে আসাতে পেশাদার ফটোগ্রাফির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে ফটোগ্রাফির এই সুপ্রচলিত মাধ্যম থেকে ক্রমশ মুখ ফিরিয়ে নেন।
অবশেষে, ২০০৯ সালে, কোডাক এটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। কোডাক্রোমের সর্বশেষ রোলটি ২০১৩ সালে স্টিভ ম্যাককুরি (Steve McCurry) ছবি তুলতে ব্যবহার করেন। ম্যাককুরি’র রোলে তোলা ছবিগুলো তার ওয়েবসাইটে এখনও শোভা পাচ্ছে। বিদায়, কোডাক্রোম
অরিজিনাল লেখাটি (অ্যান ডাভলিন) Ann Davlin এর কৃতিত্ব যা পরে ক্রিশ ফোর্ড (Chris Ford) এর হাতে সমৃদ্ধ হয় এবং এটি photodoto.com ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। এই লেখাটি প্রকাশিত লেখার বাংলা সংস্করণ।
0 Comments