টিপ ১. টার্গেট প্রাণীর খুব কাছাকাছি পৌঁছানোর টেকনিক
ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফিতে মিনিমাম ৩০০ এমএম ফোকাল লেন্থের একটি টেলিফটো লেন্স ন্যূনপক্ষে থাকা জরুরী; আর এর চেয়ে বেশী জরুরী হল, প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়ে অত্যন্ত সন্তর্পনে আপনার টার্গেট করা প্রাণীর একেবারে কাছে পৌঁছে যাওয়ার টেকনিক; কারণ এভাবে সাবজেক্টের ছবি দিয়ে পুরো ফ্রেম ভর্তি করে শট নিতে পারবেন।পাখি, প্রজাপতি, বাঘ, হরিণ – যে প্রাণীরই ছবি তুলতে যান না কেন, তাদের বিচরণের স্থান ও স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে ভালভাবে জেনে নিয়ে ছবি তুলতে যেতে হবে। ওয়াল্ড-লাইফ ফটোগ্রাফিতে ধৈর্য্যটাই মূলধন। হুট করে ছবি তুলতে গিয়ে দুই-চারটা ক্লিকে ভূবন-বিখ্যাত ছবি পাওয়া যাবে না। এর জন্য ধৈর্য্য ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা (এমনকি দিনের পর দিন) বসে থাকা লাগতে পারে।
ওয়াইল্ডলাইফে যে সাবজেক্টের উপরে ছবি তুলতে চাচ্ছেন, সেটার উপরে সার্চ ইঞ্জিন গুগলে কিছু সার্চ দিয়ে পড়াশুনা করে নিন; কোন স্থানে তাদের বেশী দেখতে পাওয়া যায়, বছরের কোন সময়ে (এবং কোন দিনে) গেলে তাদের দেখা পাওয়া যাবে, কাছে গিয়ে ছবি তোলা যাবে – এই ব্যাপারগুলো ভালভাবে জেনে স্পটে গেলে ভাল ছবি পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ক্যামোফ্লেজ ড্রেস বা পরিবেশের সাথে মিশে যায় এমন ড্রেস (যা চকচকে ও মনোযোগ আকর্ষণ করে, এমন না) পরিধান করা উচিত। সুগন্ধি ডিওডোরেন্ট একদমই বাদ। দিনের বেলা সাধারণত: ভোরে বা সন্ধ্যার কিছু আগে স্পটে থাকতে হবে; কারণ এ সময় সাবজেক্টকে সবচেয়ে অ্যাকটিভ পাবেন।
টিপ ২. নিজের গাড়ি বা সুবিধামত আড়ালে অবস্থান নিন
ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফিতে প্রাণী বা পাখির বেশ কাছে গিয়ে শট নেয়া বেশ কঠিন একটা কাজ। পেশাদার ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারের প্রয়োজনীয় কিটের মধ্যে একটি হল নিজেকে লুকিয়ে ফেলার জন্য ব্যবহৃত ব্লাইন্ড।হয়ত আমাদের অনেকেরই স্পটে জায়গামত কোন আড়ালে বসার সেট রেডি নাই, বা আগে থেকে কেউ তৈরী করে রেখে যায় নাই; এ রকম কিছু থাকলেও দিনের পর দিন সেখানে বসে থাকার সময়ও নেই। এ ক্ষেত্রে সাথে গাড়ি থাকলে এর আড়ালকে অস্থায়ী সমাধান হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
পাখিরা কেন জানি গাড়িকে একেবারেই ভয় পায় না। তবে, গাড়ির আড়ালে লুকিয়ে থাকা ফটোগ্রাফারকে সাবধানে থাকতে হবে যেন নড়াচড়া করে পাখিকে ভয় না পাইয়ে দেন।
পাখির শ্যুটিং এর সময় সাথে একটা বিনব্যাগ রাখা উচিত। গাড়ির দরজার ফ্রেমে বিনব্যাগ বিছিয়ে তার উপরে লেন্সকে রেখে নিজে পজিশন নিন, ক্যামেরা বডি বা লেন্সের ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার অন করে নেন; গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ থাকবে, বলাই বাহুল্য।
এভাবে পাখির সবচেয়ে শার্প শট নেয়া যায়। রেডিমেড বিনব্যাগ মার্কেট থেকে সংগ্রহ করতে পারেন, কিংবা একটি ব্যাগে গম রেখে নিজেই বিনব্যাগ বানিয়ে নিতে পারেন।
টিপ ৩. বাগানের পাখির ছবি তোলা
প্র্যাকটিসের মধ্য দিয়ে কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় – পোট্রেট ও ল্যান্ডস্কেপ ছবির ক্ষেত্রে কথাটা খুব বেশী প্রযোজ্য হলেও ওয়াইল্ডলাইফের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা অত সহজ না। এ ক্ষেত্রে বাসার আশেপাশের বাগান বা উদ্যানে দেখতে পাওয়া পাখির ছবি তুলে হাত পাকানো একটি ভাল উপায়।বাড়ির আশেপাশে একটি ছোটখাট “পাখির স্টুডিও” তৈরী করে নিন। গাছের কোন গুড়ি থাকলে তার সাথে একটি প্লাটিকের পানির ফিডার স্থাপন করে দিন; চাই কি কিছু শষ্য দানা রেখে দিন। অপেক্ষা করুন। দেখা যাবে পাখিরা আপনার এই আপ্যায়নে সাড়া দিবে। খাওয়া-দাওয়া ও পানি পান – দুটোই ব্যবহার করা শুরু করবে।
টিপ ৪. স্থানীয় চিড়িয়াখানার প্র্যাকটিস করা
ওয়াইল্ডলাইফে জলজ্যান্ত বাঘ, হরিণ বা কুমিরের ছবি তোলার টেকনিক একটু ভিন্ন। স্থানীয় চিড়িয়াখানা বা ওয়াইল্ডলাইফ পার্কে গিয়ে এই টেকটিক রপ্ত করার একটা ভাল জায়গা। এ জায়গা দুটোতে সাধারণ তারের বেড়া বা কাঁচের ভিতর দিয়ে ছবি তুলতে হয়।তারের বেড়ার একেবারে সাথে লেন্স লাগিয়ে নিয়ে বেড়া দূরে অবস্থানরত প্রাণীর উপরে ফোকাস করুন; ব্যবহার করুন বড় অ্যাপারচার, এতে ডেপথ অব ফিল্ড কম থাকবে – পিছনে সুন্দর ব্লার পাওয়া যাবে। আর এ ভাবে ছবি তুললে তারের বেড়ার কিছুই ছবিতে আসবে না।
গ্লাসের মধ্যে দিয়ে শ্যুট করতে হলে লেন্সের ফ্রন্ট এলিমেন্টকে সাবধানে গ্লাসের সাথে ঠেকান; যাতে গ্লাসের রিফলেকশন এড়ানো যায়। লেন্সের সাথে হুড লাগানো থাকলে ভাল হয়; নিশ্চিন্তে গ্লাসের সাথে ঠেক দেয়া যায়।
টিপ ৫. প্রাণীর ছবিতে চোখের কন্টাক্ট (eye contact) থাকা জরুরী
প্রাণীর ছবি তুলবার সময় ক্যামেরাকে তার চোখের সমান্তরালে নামিয়ে আনুন; এতে ছবিতে বিশ্বাসযোগ্য ন্যাচারাল একটা ভাব চলে আসবে। স্পট মিটারিং মুডে সিঙ্গেল ফোকাস পয়েন্টটা প্রাণীর চোখে ফোকাস করুন। এটা একেবারে আবশ্যক একটা ব্যাপার।ম্যানুয়ালি সিঙ্গেল ফোকাস পয়েন্ট ব্যবহার করা জরুরী; কেননা ম্যাট্রিক্স মিটারিং মুড ব্যবহার করলে ক্যামেরা তার মর্জি মত ফোকাস পয়েন্ট নির্ধারণ করে। দেখা যায়, প্রাণির যে অংশটি ক্যামেরার কাছে থাকে যেমন: নাক, বা কান, ঠোট বা নখে ফোকাস করার ফলে ঐ অংশটুকু শার্প হবে; যেখানে চোখে ফোকাস না হলে ওয়াইল্ডলাইফ ছবির মুল আবেদনটাই ব্যর্থ হতে পারে।
টিপ ৬. স্পটিং স্কোপ (spotting scope) এর ব্যবহার
বড় লেন্সের দাম অনেক। প্রফেশনাল কোয়ালিটির ৬০০ এমএম প্রাইম লেন্সের দাম ফ্যামিলি গাড়ির থেকেও বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু, অনেক কম খরচে ডিজিস্কোপিং (digiscoping route) পদ্ধতিতে ম্যাগনিফিকেশন বাড়িয়ে নিতে পারেন।আপনার ডিএসএলআর ক্যামেরার বডি বা কম্প্যাক্ট ক্যামেরার সাথে একটা এ্যাডাপটার লাগিয়ে এই “স্পটিং স্কোপ” লাগিয়ে নিয়ে ম্যাগনিফিকেশন বাড়িয়ে নিন; আর আরও দূরবর্তী পাখি বা প্রাণীর ফ্রেম-ভর্তি-করা ছবি তুলতে পারেন।
কিন্তু এই পদ্ধতিতে একটা সমস্যা আছে। অ্যাডাপটার লাগালে ক্যামেরা তার অটোফোকাস এর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং টেলিফটো লেন্সের মত অ্যাপারচার কম-বেশি করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন। সম্পূর্ণ ম্যানুয়ালি অটোফোকাস করতে হয়।
আর, ডিজিস্কোপিং পদ্ধতি কম খরচে দারুণ ম্যাগনিফিকেশন পেলেও ছবির শার্পনেস কিছুটা কমে যায়। এর কারণ হল, অনেক বেশি ম্যাগনিফিকেশনের ফলে ক্যামেরার ইন্টারনাল পার্টসের ঝাঁকুনির ফলে ছবির শার্পনেস কমে যায়।
স্পটিং স্কোপ ব্যবহারে এফেক্টিভ অ্যাপারচার ছোট হয়ে ছবিতে আলো কমে যায় এবং স্বাভাবিকভাবে সাটার স্পীডও সমানুপাতিকভাবে কমে যায়।
টিপ ৭. প্রাণী বা পাখির প্যানিং শট
প্যানিং এমন এক টেকনিক যাতে চলমান প্রাণীর সাথে সাথে ফটোগ্রাফারকে ক্যামেরা ও লেন্স ভূমির সমান্তরালে একই গতিতে ফলো করে সরিয়ে থাকেন। মোদ্দা কথা হল, এই পদ্ধতিতে সাবজেক্ট ফ্রেমের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্থির রাখা হয়, যাতে ছবিতে সাবজেক্টের শার্প ছবি পাওয়া যায়, কিন্তু ক্যামেরা সরানোর গতির কারণে (এবং সাটার স্পীড কম থাকায়) ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার আকারে ছবিতে দেখা যায়।এই টেকনিক দিয়েই উড়ন্ত পাখির ছবি তোলা যায়।
ট্রাইপডের সাথে “বল হেড” লাগিয়ে নিলে সবচেয়ে সুন্দরভাবে ও সাবলীলভাবে শার্প প্যানিং শট নেয়া যায়। কিন্তু, ফ্রি-হ্যান্ড প্যানিং শট নেবার সময় গাইরোস্কোপ-বেসড ইমেজ-স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করলে শার্প শট পাবেন।
টিপ ৮. সুন্দর কম্পোজিশন
ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফিতে দীর্ঘ দিন লেগে থাকার পরও ভাল ও মনে-রাখার-মত শট না পেয়ে এই ধরণের ছবি তোলা ছেড়ে দিয়েছেন – এমন ফটোগ্রাফার আশেপাশে খুঁজলেই পাওয়া যাবে। কম্পোজিশন ঠিক রেখে প্রাণীর ছবি তোলা চ্যালেঞ্জিং একটা ব্যাপার। কিন্তু, কিছু ট্রিক ব্যবহার করে কম্পোজিশনকে প্রফেশনাল লেভেলে উঠিয়ে নেয়া যায়।যে প্রাণীর ছবি তুলবেন সেটি ডানে বা বামে চেয়ে থাকলে, সাবজেক্টকে ফ্রেমের এক-পাশে (off-centre) বা রুল-অব-থার্ড (rule of third) কম্পোজিশন রুল ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হয়।
এই রুল অনুযায়ী, প্রাণীটি যদি বামে তাকিয়ে থাকে, তবে প্রাণীকে ডানে কর্নারের দিকে রেখে ফ্রেমের বাম দিকে দু-তৃতীয়াংশ ফাঁকা রাখা রাখুন।
আর, যদি ডানের দিকে তাকিয়ে থাকে, তবে প্রাণীটিকে ফ্রেমের বামের দিকে রেখে ডানের দিকে দুই-তৃতীয়াংশ ফাঁকা রাখুন।
আর, রুল অন থার্ড ব্যবহারের সময় ক্যামেরা থেকে সিঙ্গেল AF পয়েন্ট মুড ব্যবহার করে যে কোন ফোকাস পয়েন্টকে প্রাণীর উপরে রেখে সাটার চাপ দিয়ে শিট নিন।
বিকল্প পদ্ধতিতে ক্যামেরা লাইভ ভিউ অন করে 3×3 গ্রীড চালু করুন। এবার গ্রীডের রেখা দুটি যেখানে ক্রস করেছে সেখানে পূর্ণ প্রাণীটি বা প্রাণীর যে কোন উল্লেখযোগ্য অংশকে রেখে শট নেয়া যেতে পারে।
পিসিতে ছবি ডাউনলোড করার পর আপনার ফটো এডিটরে ছবি দেখে প্রয়োজনে ছবি ক্রপ করে কম্পোজিশনের আরও উন্নতি করতে পারবেন। তবে, ক্রপ করার সময় ছবির অরিজিনাল অ্যাসপেক্ট রেশিও ঠিক রাখতে হবে; কারণ অ্যাসপেক্ট রেশিও ঠিক রাখা স্ট্রং কম্পোজিশনের গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।
টিপ ৯. সঠিক এক্সপোজারের জন্য ম্যানুয়ালি মিটারিং সেট করা
প্রাণীদের মধ্যে কারও কারও লোপ গাঢ় রঙের, কারও হালকা রঙের। এই কারণে ক্যামেরা মিটারিং মুড সঠিক এক্সপোজার হিসাব করতে ভুল করে। শট নেয়ার পর দেখা গেল, গাঢ় রঙের সাবজেক্টের ছবি হালকা (overexposed) হয়ে গেছে; আর হালকা রঙের সাবজেক্টের ছবি এসেছে বেশ কালো (underexposed)।সঠিক এক্সপোজার পেতে, ক্যামেরার বডির এক্সপোজার মিটার ঘুরিয়ে ম্যানুয়াল মুডে নিয়ে আনুন – ফ্রেমের মধ্যে যে এরিয়া নিয়েছেন তার মধ্যে একইভাবে আলোজ্জ্বল মিডটোন সাবজেক্টের উপরে ফোকাস করুন – যেমন ঘাস বা পাথর হতে পারে – এবার অ্যাপারচার এবং সাটারস্পীড অ্যাডজাস্ট করুন। এবার এক্সপোজার মিটারে দেখে নিন মিটার “0” এর সাথে এক লাইনে এসেছে কিনা। যদি না আসে তবে অ্যাপারচার ও সাটারস্পীড কমিয়ে-বাড়িয়ে “0” এর বরাবর নিয়ে আনুন।
এভাবে এক্সপোজার রিডিং নেয়া শেষ হলে ফ্রেম রিকম্পোজ করে ফ্রেম ঠিক করে নিয়ে শট নিন। ডিসপ্লেতে দেখে নিন আপনার সাবজেক্টের এক্সপোজার ঠিক এসেছে কিনা। প্রয়োজনে আরও এ্যাডজাস্ট করে নিতে পারবন।
টিপ ১০. শার্প ছবির জন্য মনোপড (monopod) এর ব্যবহার
বড়, ভারী ও মূল্যবান টেলিফটো লেন্সের জন্য উপযুক্ত ট্রাইপড দরকার হয়। যে কোন ধরণের সৃষ্ট ঝাকুনি থেকে ছবি ব্লার হওয়ার আশংকামুক্ত হতে ট্রাইপডের সাথে বিশেষ ধরণের বলহেড ব্যবহার করা হয়ে থাকে।আবার, এত বড় সেটআপ বহন করে দ্রুত এদিক-ওদিক যাওয়া বেশ কষ্টকর – এক জায়গায় বসে থেকে ছবি তোলার কথা আলাদা; কিন্তু চলমান প্রাণীকে ফলো করে তার পিছে পিছে ঘুরে ছবি তোলার লথা আবার একেবারে ভিন্ন বাস্তবতা। তখন আর এতবড় লেন্সসহ ট্রাইপড টানাটানি করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
যদি প্ল্যান করে থাকেন সুন্দরবনে হরিণের পিছে ছুটে তাদের ছবি তুলবেন – এ ক্ষেত্রে স্পোর্টস ফটোগ্রাফারগণ যে কৌশল নেন, সেটি অনুসরণ করতে পারেন। টেলিলেন্সের সাথে মনোপড জুড়ে নেন। মনোপডে ট্রাইপডের মত স্ট্যাবিলিটি পাবেন না, কিন্তু, দ্রুত নড়াচড়া করাতে পাবেন দারুণ স্বাচ্ছন্দ্য।
তাই, ট্রাইপডের বিকল্প হিসাবে চিন্তা না করে ক্ষেত্র বিশেষে মনোপড বেশ কাজের জিনিষ হয়ে উঠে।
আর খুব আটশাট জায়গা (চিড়িয়াখানা), বা কাঁদাময় নরম ভূমিতে (সুন্দরবনের নদী সংলগ্ন ম্যানগ্রোভ এলাকা) যেখানে ট্রাইপড বিছানো অসম্ভব, সেখানে মনোপড একটি পারফেক্ট বিকল্প অ্যাক্সেসরিজ।
টিপ ১১. হাতে (handheld) ছবি তুলবার নিরাপদ সাটার স্পীড
হাতে ছবি তুলবার সময় লেন্সের যে ফোকাল লেন্থ থাকবে, কোন অবস্থাতেই, সাটার স্পীড তার থেকে কম হতে পারবে না। যদি করেন, তবে হাতের ও ক্যামেরার কম্পনের কারণে ছবি ব্লার হয়ে যাবে, এমনকি, নষ্টও হয়ে যেতে পারে।একটি ফুল-ফ্রেম ক্যামেরাতে, লেন্সের যে ফোকাল লেন্থ নিবেন, সেটাই গাইড হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন – অর্থাৎ যদি আপনার ৩০০ মিমি লেন্স লাগানো থাকে, তবে ব্লার-মুক্ত ছবির জন্য সর্বনিম্ন প্রস্তাবিত শাটার স্পীড সেট করুন ১/৩০০ সেকেন্ড।
APS-C বডির ক্যামেরার ক্রপ ফ্যাক্টর ১.৫ বা ১.৬ এর মধ্যে থাকে, সুতরাং লেন্সের ফোকাল লেন্থের বিপরীতে “নিরাপদ” হ্যান্ডহেল্ড সাটার স্পীড পরিমাপের জন্য এই ক্রপ ফ্যাক্টর দ্বারা গুণ দিতে হবে।
কিন্তু, মনে রাখা প্রয়োজন যে, এটি কেবল একটি কাগুজে নিয়ম। ক্যামেরাকে শক্ত হাতে ধরে রাখার ফটোগ্রাফারের দক্ষতা, যে প্রাণীকে টার্গেট করেছেন সেটি থেমে আছে নাকি চলমান কিনা, ব্যবহৃত লেন্সে ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন “অন” আছে কিনা, কিংবা, লেন্সকে কোন বেড়া, গাছ বা রেলিং এর উপরে বসিয়ে নিয়ে শুট করছেন কিনা – এই সব ফ্যাক্টরের উপরে ভিত্তি করে সাটার স্পীড একটু কম-বেশী করার চিন্তা করা যেতে পারে।
0 Comments