গরমে পায়ের যত্নে কিভাবে নিবেন

শরীরের সাথে সাথে পায়ের যত্ন নেয়াও খুব জরুরী । সামান্য অবহেলা এবং অযত্নে এই গরমে  পায়ে নানারকম অ্যালার্জি, ইনফেকশান দেখা দিতে পারে। কিন্তু কিছুটা যত্নবান হলে আর নিয়ম মেনে চললেই এই সব সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। নিচে গরমে পায়ের যত্নে করণীয় কিছু সহজ টিপস দেয়া হল –
১. পায়ের নখ ছোট রাখুন
সবসময় পায়ের নখ ছোট করে কেটে রাখুন। ছোট নখ অনেকরকম ইনফেকশান ও চর্মরোগ প্রতিরোধ করে। ছোট নখে ময়লা প্রবেশ করতে পারে না, তাই পরিষ্কার রাখা সহজ হয়।
২. কুসুম গরম পানিতে পা পরিষ্কার করুন
প্রতিদিন কর্মস্থল থেকে ঘরে ফিরে কুসুম গরম সাবান পানিতে পা ধোয়ার অভ্যাস করুন। এটি আপনার পায়ের ঘাম হওয়ার প্রবণতা কমায় এবং দ্রুত পায়ের দুর্গন্ধ ও দূর করে ।
৩. পায়ে বাতাস চলাচল করতে দিন
যতটা সম্ভব পায়ে বাতাস লাগতে দিন । ভারী পা ঢাকা জুতো না পরে, খোলামেলা এবং নরম স্যান্ডাল পরুন। এতে পা ঠাণ্ডা থাকে এবং পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায় ।

৪. পায়ে পাউডার লাগান
পায়ের ঘাম ও দুর্গন্ধ কমাতে পাউডার লাগানো খুবই ভাল অভ্যাস। মোজা পরার আগে পায়ে পাউডার দিয়ে নিন । যাদের পা ঘেমে যাওয়ার সমস্যা আছে, তারা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও পাউডার দিয়ে নিতে পারেন।
৫. পায়ের যত্নে বরফ পানি এবং গোলাপ জল
একটি বোলে বরফ দেয়া পানি অথবা ঠাণ্ডা পানি নিন। তার সাথে অল্প গোলাপ জল মেশান । তারপর তাতে পা ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। এরপর পরিষ্কার টাওয়াল দিয়ে পা মুছে নিন। এই পদ্ধতিতে পায়ের ঘাম ও দুর্গন্ধ হওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং রোদে পোড়া দাগও কমে আসে । সপ্তাহে ২বার অথবা ৩ বার এই পদ্ধতিতে পায়ের যত্ন নিতে পারেন।
৬. প্রতিদিন মোজা পরিবর্তন করুন
একই মোজা বারবার পরার কারণে পায়ে দুর্গন্ধ থেকে শুরু করে নানা রকম ব্যাকটেরিয়াল এবং ছত্রাকজনিত ইনফেকশন হতে পারে। একই মোজা একদিনের বেশি পরা উচিত নয়। সবসময় পরিষ্কার মোজা পরুন এবং মোজা কড়া রোদে শুকাতে দিন ।

৭. মরা চামড়া পরিষ্কার করুন
শীত গ্রীষ্ম কোন সময়েই পায়ের গোড়ালির মরা চামড়া থাকা ঠিক নয়। স্ক্র্যাবার দিয়ে ঘষে ঘষে গোড়ালির মরা চামড়া উঠিয়ে ফেলুন। স্ক্র্যাব করার পর পা পরিষ্কার করে হালকা কোন ময়েশচারাইজার লাগিয়ে নিন।
৮. ম্যাসাজ
মাঝে মাঝে হালকা নারিকেল তেল অথবা অলিভ অয়েল নিয়ে পায়ে ম্যাসাজ করুন । এতে পায়ের রক্ত চলাচল বাড়ে এবং পা সচল ও সুন্দর থাকে।
৯. লেবুর রস এবং লবণের স্ক্র্যাব
গরমে পা ঘেমে পায়ে প্রচুর ধুলাবালি লেগে থাকে । সপ্তাহে ১ দিন অথবা ২ দিন , পা পরিষ্কার করে লেবুর রস এবং লবণের তৈরি স্ক্র্যাব দিয়ে পা স্ক্র্যাব করুন। এই স্ক্র্যাব চামড়ার ভেতর থেকে ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে । ৫ মিনিট স্ক্র্যাব করার পর হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে নিন।
১০.সানস্ক্রিন রোদে বের হবার আগে পায়ে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন। সানস্ক্রিন আপনার পা কে রোদে পোড়ার হাত থেকে রক্ষা করে । সানস্ক্রিন লাগানোর পর পায়ে পাউডার লাগিয়ে নিন। এটি আপনার পা ঘেমে যাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে আনবে।

  এছাড়া সব সময়ের জন্য
বাটার
রাতে ঘুমতে যাওয়ার সময় ভালো করে হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে নিন। এবার সিয়া বাটার পায়ের পাতায় লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রাখুন। ভেজা তোয়ালে দিয়ে ভালো করে মুছে গোলাপ জল লাগিয়ে নিন।
সানস্ক্রিন
বাসা থেকে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন মেখে নিন পুড়ে যাওয়ার ভয় থেকে রক্ষা পাবেন । খেয়াল করে দেখবেন মুখের থেকেও বেশি ট্যান হয় পায়ে। তাই পায়ে ভাল করে সানস্ক্রিন অবশ্যই লাগাবেন ।
বরফ, গোলাপ
রোদ থেকে এসে ঠান্ডা পানি খেলে যেমন আরাম পাওয়া যায়, তেমনি পায়ে বরফ ঘষলে আরাম পাওয়া যায় । একটি পাত্রে বরফ মেশানো পানি নিয়ে সাথে গোলাপের পাপড়ি আর পুদিনা পাতা ফেলে ২০ – ২৫ মিনিট পা রাখুন। দেখবেন ভীষণ স্বস্তি লাগবে।
হোম পেডিকিওর
যেতে হবেনা পার্লারে । বাড়িতেই করে পেলুন পেডিকিওর। টকদই, বেসন আর একচামচ চালগুড়ি দিয়ে প্যাক বানিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিয়ে ফুট ক্রিম ম্যাসাজ করুন । এর ফলে পায়ের রক্ত সঞ্চালনও ভালো হবে ।
নারকেল তেল
নারকেল তেল এমনিতে অনেক উপকারি। তাই পায়েও লাগান,পা ভালো করে ধুয়ে নারকেল তেল লাগিয়ে সারারাত রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে গরম পানিতে তুলো ভিজিয়ে মুছে পেলুন। সারাবছর এমন ভাবে যত্ন নিলে পা ভালো থাকবেই।
জুতো
সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি। কোন ধরনের জুতো পরে আপনি আরামপান তা আগে দেখুন। সেই অনুযায়ী জুতো নির্বাচন করুন, তা ফ্যাশানেবল না হলেও চলবে। চলতে সুবিধে হচ্ছে কিনা সেটা দেখা খুব জরুরি।

Post a Comment

0 Comments